উদ্বোধন সময়রেখা
In the 1890
১৮৯০-এর দশকে, যখন স্বামী বিবেকানন্দ বিদেশে বেদান্তের প্রচার ও ভারতবর্ষের ভবিষ্যতের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করছেন, তখন প্রথম একটি পত্রিকা প্রকাশের কথা তাঁর মাথায় আসে। এই পত্রিকার মাধ্যমে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের বার্তাকে সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব বলে তাঁর মনে হয়।
Swamiji wrote a letter
১৮৯৪-১৮৯৫ নাগাদ স্বামীজি তাঁর গুরুভাই স্বামী ব্রহ্মানন্দ ও স্বামী রামকৃষ্ণানন্দকে চিঠিতে একটি পত্রিকা আরম্ভ করার কথা বলেন – এও বলেন যে সেটি দ্বিভাষিক হলেই ভালো – যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে বেদান্তের বাণী, শ্রীরামকৃষ্ণের বার্তা, এবং নতুন ভারত গড়ার জন্য উৎসাহ পৌঁছে দেওয়া যাবে। ভারত সে সময় ব্রিটিশ উপনিবেশ, নিজের মেরুদণ্ডের জোর বলতে তার বিশেষ কিছু নেই। এই নতুন পত্রিকাকে সেই গুরুদায়িত্ব নেবার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।
The Ramakrishna Mission was officially established
১৮৯৭ খ্রীষ্টাব্দে বলরাম বসুর বাড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা হয়। স্বাভাবিকভাবেই, নতুন এই সঙ্ঘের একটি মুখপত্রের প্রয়োজন হয়। স্বামী বিবেকানন্দ শ্রীমতী জোসেফিন ম্যাকলেওডকে চিঠি লিখে সাহায্য করতে অনুরোধ জানান।
The publication of the first issue
১৪ জানুয়ারী ১৮৯৯, প্রথম বর্ষ প্রথম সংখ্যা প্রকাশ করে উদ্বোধনের পথ চলা শুরু হয়। এই প্রথম সংখ্যায় স্বামী বিবেকানন্দের লেখা একটি ‘প্রস্তাবনা’ ছিল, যাতে পত্রিকার উদ্দেশ্য ও সামাজিক ভূমিকা সম্পর্কে তিনি পাঠকদের অবহিত করেন। ‘উদ্বোধন’ হবে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের একটি আদর্শ সেতুস্বরূপ। প্রাচীন প্রজ্ঞা ও আধুনিক জ্ঞান – এই দুই জিনিস মিলবে উদ্বোধনের পাতায়। উদ্বোধনে ধর্ম, সমাজ, রাজনীতি, দর্শন, বিজ্ঞান, কৃষি, শিল্প, সাহিত্য, ভ্রমণ – সবরকম বিষয়েই লেখা ছাপা হবে। সব লেখার মধ্যেই থাকবে উন্নত চিন্তাধারা ও ইতিবাচক মনোভাব। ‘উদ্বোধন’ হবে নতুন ভারতবর্ষেরই উদ্বোধন।
Rajyog
স্বামী শুদ্ধানন্দ একে একে স্বামী বিবেকানন্দের ইংরিজী লেখাগুলি বাংলায় অনুবাদ করতে শুরু করেন। প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যায় ‘রাজযোগ’-এর কিছু অংশ ছাপা হয়। বিবেকানন্দের মূল বাংলা রচনাও প্রকাশিত হয়, যেমন তাঁর লেখা ম্যাক্স মূলারের রামকৃষ্ণজীবনীর সমালোচনা। প্রথম বর্ষ ষষ্ঠ সংখ্যা থেকে ‘বর্তমান ভারত’ ধারাবাহিকভাবে বের হতে থাকে।
Successor of Kaliprasanna Singh and Piarichand Mitra
স্বামী বিবেকানন্দের নেতৃত্বে ‘উদ্বোধন’ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিপ্লব এনে দিল। বিবেকানন্দ বার বার চিঠিতে তাঁর গুরুভাইদের চলিত বাংলা ব্যবহার করতে বলতেন, কারণ তিনি মনে করতেন যে মানুষের মনের কাছাকাছি পৌঁছতে গেলে মুখের ভাষার বিকল্প নেই। অবশ্যই এই ধারণা সমসাময়িক সাহিত্যিক ধারা থেকে অনেকখানি এগিয়ে ছিল – হুতোমী গদ্য আর আলালী গদ্য ছাড়া লিখিত বাংলায় চলিত ভাষার প্রয়োগ তখনো পর্যন্ত নেই বললেই চলে। বিবেকানন্দ নিজে কালীপ্রসন্ন সিংহ ও পিয়ারীচাঁদ মিত্রের সুযোগ্য উত্তরসূরী হয়ে অপূর্ব চলিত বাংলায় কলম ধরেন। উদ্বোধন এখনও অবধি পাক্ষিক পত্রিকা, দশম বর্ষ থেকে তা পুরোপুরি মাসিক হয়ে যাবে।
first inaugural press
১৮৯৯ খ্রীষ্টাব্দ; মিশনের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। তা সত্ত্বেও অনেক চেষ্টায় কিছু টাকার ব্যবস্থা হয়, বিবেকানন্দ নিজে এক হাজার টাকা যোগাড় করেন, শ্রী হরিমোহন মিত্র আরো এক হাজার টাকা দেন। একটি ছাপার মেশিন কিনে শ্যামবাজারের কম্বুলিটোলার ১৪ রামচন্দ্র মৈত্র লেনে বসানো হয়। এটিই প্রথম উদ্বোধন প্রেস।
Bilatjatrir Patro
প্রথম বর্ষ পঞ্চদশ সংখ্যা থেকে বিবেকানন্দের ‘বিলাতযাত্রীর পত্র’ বের হতে থাকে; পরে, তৃতীয় বর্ষ থেকে, এটি নাম বদলে ‘পরিব্রাজক’ হবে এবং সেই নামেই বিখ্যাত হবে। দ্বিতীয় বর্ষ ও তৃতীয় বর্ষ – এই দুই বছর ধরে ‘প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য’ ধারাবাহিকভাবে বেরোয়। বাংলা সাহিত্যে এই দু’টি বইই চিরস্মরণীয় হয়।
The inaugural office
উদ্বোধন কার্যালয় ১৩১৩ সালের অগ্রহায়ণ থেকে ১৩১৫ সালের অগ্রহায়ণ অবধি সাময়িকভাবে বাগবাজারের ৩০ বোসপাড়া লেনে স্থানান্তরিত হয়। ১৩১৫-এর পৌষ থেকে কার্যালয় ১ উদ্বোধন লেনে উঠে আসে, এবং সেখানেই স্থায়ী হয়।
1902
১৯০২ খ্রীষ্টাব্দে স্বামী বিবেকানন্দের “হিন্দুধর্ম ও শ্রীরামকৃষ্ণ” লেখাটি প্রকাশিত হয়। এটিই উদ্বোধনে তাঁর শেষ লেখা; ৪ জুলাই স্বামীজি দেহত্যাগ করেন। স্বামী ত্রিগুণাতীত ১৯০২ খ্রীষ্টাব্দের ২৭শে সেপ্টেম্বর সান ফ্রান্সিসকোর উদ্দেশে রওনা হন। উদ্বোধনের ভার পরবর্তী সম্পাদকের ওপর বর্তায়।
The ‘inauguration’ became a major source of patriotic
বাংলার যুবসম্প্রদায়ের কাছে ‘উদ্বোধন’ দেশাত্মবোধক ও সেবামূলক প্রেরণার এক প্রধান উৎস হয়ে ওঠে। ব্রিটিশ অপশাসনের বিরুদ্ধে তরুণ-তরুণীরা ধীরে ধীরে রুখে দাঁড়াতে শুরু করে, বিশেষ করে ১৯০৫ খ্রীষ্টাব্দের বঙ্গভঙ্গের পরে আত্মোৎসর্গের আদর্শ বাঙালীদের মনে জোরালো হয়ে ওঠে। স্বাধীনতা সংগ্রামীরা প্রায়ই সঙ্গে গীতা এবং বিবেকানন্দের লেখা রাখে, তা থেকে সরাসরি প্রেরণা সংগ্রহ করে।
Kedarnath Das donated a piece of land at Belur Math to Gopal Niyogi Lane
১৯০৫ খ্রীষ্টাব্দের ১৮ জুলাই শ্রী কেদারনাথ দাস বেলুড় মঠকে গোপাল নিয়োগী লেনে এক টুকরো জমি দান করেন; নির্মাণকাজ ১৯০৭ খ্রীষ্টাব্দের নভেম্বরে শুরু হয় এবং ১৯০৮-এর শেষদিকে সমাপ্ত হয়। উদ্বোধন অফিসটি নিচতলায়, এবং উপরের তলাগুলি মা সারদার বাসভবন এবং তার ভক্তদের জন্য সংরক্ষিত হয়। উদ্বোধন ১৯০৮-এর নভেম্বরে এই ঠিকানায় তার কার্যালয় তুলে আনে। যেহেতু এটি বেলুড়ের প্রধান কেন্দ্রের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান, তাই শাখাটির নাম হয় “শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ, বাগবাজার”।
Ma Sarada arrives
১৯০৯ খ্রীষ্টাব্দের ২৩ মে মা সারদা উদ্বোধনের নতুন বাড়িতে আসেন। এই বাড়ি এখন থেকে ‘মায়ের বাড়ি’ নামেই পরিচিত হবে। এখানে থাকার সময়ে অগণিত ভক্ত তাঁকে দেখতে এবং প্রণাম জানাতে আসতেন। তাদের মধ্যে এমন অনেকে থাকতেন যাঁরা দেশের জন্যে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। বিখ্যাত বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ (পরে শ্রী অরবিন্দ নামে খ্যাত) ১৯১০ খ্রীষ্টাব্দে নিরুদ্দেশ হওয়ার আগে এখানে এসে মাকে প্রণাম করে যান।
New office
১৯১৭ খ্রীষ্টাব্দে ১৪ নয়নকৃষ্ণ সাহা লেনে একটি নতুন অফিস নির্মিত হয়।
১৯২০ খ্রীষ্টাব্দের ২১ জুলাই মা সারদা দেহত্যাগ করেন।
A new office
১৯১৭ খ্রীষ্টাব্দে ১৪ নয়নকৃষ্ণ সাহা লেনে একটি নতুন অফিস নির্মিত হয়। ১৯২০ খ্রীষ্টাব্দের ২১ জুলাই মা সারদা দেহত্যাগ করেন।
Kartikchandra Ghatak makes a donation of some land adjacent to the office
১৯৫৬ খ্রীষ্টাব্দে শ্রী কার্তিকচন্দ্র ঘটক কার্যালয়-সংলগ্ন কিছু জমি উদ্বোধনকে দান করেন এবং পরে আরও কিছু জমি কেনা হয়। এতে দালানের আয়তন বাড়িয়ে আরো কিছু জরুরী ঘর তোলার কাজে সাহায্য হয়।
1956
১৯৫৬ খ্রীষ্টাব্দে শ্রী কার্তিকচন্দ্র ঘটক কার্যালয়-সংলগ্ন কিছু জমি উদ্বোধনকে দান করেন এবং পরে আরও কিছু জমি কেনা হয়। এতে দালানের আয়তন বাড়িয়ে আরো কিছু জরুরী ঘর তোলার কাজে সাহায্য হয়।
Publication of Vivekananda Rachanabali
১৯৬৩ খ্রীষ্টাব্দে “বিবেকানন্দ রচনাবলী” প্রকাশ পায়, এতে বাংলায় স্বামী বিবেকানন্দের যাবতীয় লেখাকে সংকলিত করা হয়। মূল ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদগুলি করেছিলেন স্বামী শুদ্ধানন্দ। এই রচনাবলী বইয়ের জগতে এখনো অতি জনপ্রিয়।
Vivekananda Rachnabali
১৯৬৩ খ্রীষ্টাব্দে “বিবেকানন্দ রচনাবলী” প্রকাশ পায়, এতে বাংলায় স্বামী বিবেকানন্দের যাবতীয় লেখাকে সংকলিত করা হয়। মূল ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদগুলি করেছিলেন স্বামী শুদ্ধানন্দ। এই রচনাবলী বইয়ের জগতে এখনো অতি জনপ্রিয়।
Udbodhan turns 100 in 1999
১৯৯৯ খ্রীষ্টাব্দে উদ্বোধনের ১০০ বছর পূর্ণ হয়: বাংলা সাময়িকপত্রগুলির মধ্যে এটি একটি অনন্য নজির।
100th anniversary
১৯৯৯ খ্রীষ্টাব্দে উদ্বোধনের ১০০ বছর পূর্ণ হয়: বাংলা সাময়িকপত্রগুলির মধ্যে এটি একটি অনন্য নজির।
2001
২০০১ এবং ২০০২-এর মধ্যে জমি-সংলগ্ন আরো কিছু জায়গা কেনা হয় এবং দালানটি দরকারমতো বাড়ানো হয়।
2001-2002
২০০১ এবং ২০০২-এর মধ্যে জমি-সংলগ্ন আরো কিছু জায়গা কেনা হয় এবং দালানটি দরকারমতো বাড়ানো হয়।